শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অ্যামাজন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দেবে

ক্রাইম রিপোর্ট ডেস্ক : বিশ্বের অনেক এলাকা এখনো দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত। বিভিন্ন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল যেখানে গতানুগতিক উপায়ে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানো সম্ভব নয়, সেসব অঞ্চলকে ব্রডব্যান্ড সেবার আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন ডটকম। এজন্য মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি ‘প্রজেক্ট কুইপার’ নামক প্রকল্পের আওতায় তিন হাজারের বেশি স্যাটেলাইট চালুর লক্ষ্যে কাজ করছে। খবর এএফপি।

মার্কিন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া নথির উদ্ধৃতি দিয়ে গিকওয়্যার নামক প্রযুক্তি ওয়েবসাইটে প্রথম প্রজেক্ট কুইপার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। প্রকল্পটি সম্পন্ন করতে ব্যয় কয়েক বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রজেক্ট কুইপার অ্যামাজনের একটি নতুন উদ্যোগ। এর আওতায় একগুচ্ছ ‘লো আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট’ চালু করা হবে। এসব স্যাটেলাইট নিম্ন ল্যাটেন্সিতে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিতে পারবে। বিশ্বের ইন্টারনেট সুবিধাবঞ্চিত কমিউনিটিকে সংযুক্ত করতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে অ্যামাজন জানায়, এটা তাদের একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প। এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সুবিধাবঞ্চিত কোটি কোটি মানুষ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ব্যবহারের সুযোগ পাবে।

অ্যামাজনের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া নথিতে বলা হয়েছে, তারা ৩ হাজার ২৩৬টি স্যাটেলাইট লো অরবিটে স্থাপন করবে। এসব স্যাটেলাইটের কার্যক্ষমতা বা ব্যাপ্তি ৩৬৭ মাইল (৫৯০ কিলোমিটার) থেকে ৩৯১ মাইল (৬৩০ কিলোমিটার) পর্যন্ত হবে। বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা সরবরাহে কাজ করছে, এমন কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারিত্বে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেফ বেজোস নিয়ন্ত্রিত অ্যারোস্পেস কোম্পানি ‘ব্লু অরিজিন’। ভবিষ্যতে ইন্টারনেট সেবা সরবরাহের কুইপার প্রকল্প ব্লু অরিজিনের সঙ্গে এক হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানানো হয়।

বিশ্বব্যাপী সহজ যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে এখন ইন্টারনেট ব্যাপক পরিসরে ব্যবহূত হচ্ছে। তবে বিশ্বের অনেক অঞ্চলে এখনো ইন্টারনেট সেবা পৌঁছায়নি। এসব অঞ্চলে সেবাটি পৌঁছানোও বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে স্যাটেলাইট প্রকল্পের পরিকল্পনা অ্যামাজনেরই প্রথম নয়। এর আগে সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক ‘অ্যাথেনা’ নামে একটি ইন্টারনেট স্যাটেলাইট প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করেছিল। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরুতেই এ প্রকল্পের স্যাটেলাইট উেক্ষপণের পরিকল্পনা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।

ইন্টারনেটের বাইরে রয়েছে, এমন মানুষদের কাছে সেবাটি পৌঁছাতে এর আগে দুটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিল ফেসবুক। তবে সেসব প্রকল্পে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়নি প্রতিষ্ঠানটি। ‘অ্যাকুইলা’ হলো ফেসবুকের একটি সৌরশক্তিচালিত ড্রোন প্রকল্প। এর মাধ্যমে গোটা বিশ্বের প্রায় ৪০০ কোটি মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল ফেসবুক। তবে অনিবার্য কারণে গত বছর জুনে এ প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায় প্রতিষ্ঠানটি।

স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দিতে ফেসবুক ছাড়াও আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে ইলোন মাস্কের স্পেসএক্স ও সফটব্যাংক সমর্থিত ওয়ানওয়েব। স্পেসএক্সের পরিকল্পনা বাণিজ্যিক কিনা, সে বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কিছুই জানানো হয়নি। এরই মধ্যে কক্ষপথে প্রোটোটাইপ স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে স্পেসএক্স। গত বছরের শুরুর দিকে স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ইলোন মাস্ক বলেছিলেন, প্রথমবারের মতো টিনটিন এঅ্যান্ডবি নামের দুটি স্টারলিংক ডেমো স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছে। পৃথিবীতে থাকা স্টেশনের সঙ্গে তাদের যোগাযোগও চলছে।

Comments are closed.

More News Of This Category