রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিলিতে আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

দিনাজপুর (হিলি) প্রতিনিধি


দিনাজপুরে হিলিতে আবারো অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। এক সপ্তাহের ব্যবধানেই কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ায় ও দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে।

সরেজমিনে গতকাল শনিবার হিলি স্থলবন্দর সংলগ্ন বাংলা হিলির পাইকারি ও খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯৭ টাকায়। যা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত। এক সপ্তাহ আগেই পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকা দরে। খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে।

বাংলা হিলি বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা শাহাবুল ইসলাম জানান, ঈদের পর তারা ভারতীয় পেঁয়াজ সেভাবে পাননি। তাই দেশি পেঁয়াজই বিক্রি করছেন। মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে তিনি বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ না আসায় দেশি পেঁয়াজের ওপর চাপ বেড়েছে। আর চাপ বেড়ে যাওয়ায় মোকামে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। তাই বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে বাধ্য হয়ে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজ না আসলে সামনে পেঁয়াজের দাম আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিক্রেতারা। এর আগে দ্বিতীয় বৃহত্তম হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে এ বন্দর দিয়ে কমেছে পেঁয়াজ আমদানি। বন্দরের আমদানিকারকরা জানান, অভ্যন্তরীণ বাজারে সঙ্কট দেখিয়ে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। সেই নিষেধাজ্ঞা ৪ মে তুলে নিয়ে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে দেশটি। ৪০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে গেলো ১৪ মে মেসার্স আর এস বি ট্রের্ডাস একটি ট্রাকে ৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করেন। পেঁয়াজ আমদানিকারকের প্রতিনিধি আহম্মেদ সরকার বলেন, ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থাকায় দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৫ মাস পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা গত ৪ মে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরও ৪০ শতাংশ শুল্ক থাকায় নানা জল্পনাকল্পনা শেষে ১১ দিন পর পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। গত ১৪ মে পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসানে পড়েন হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় পেঁয়াজ আমদানি। প্রতি মেট্রিকটন পেঁয়াজ ৫৫০ মার্কিন ডলারে আমদানি হচ্ছে এবং প্রতি কেজিতে শুল্ক দিতে হচ্ছে প্রায় সাত টাকা। ভারত সরকার যদি শুল্ক প্রত্যাহার না করে অথব্য শুল্ক না কমায়, তাহলে পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসানে পড়বে তারা। এজন্যই তারা পেঁয়াজ আমদানি করছেন না। হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক জানান, ঈদ-উল আযহার পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন দুই-একটি ট্রাকে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-অর রশিদ জানান, দুই দেশেই পেঁয়াজের শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি ভারতেও পেঁয়াজের দাম বেশি রয়েছে। এ কারণে পেঁয়াজ আমদানিতে সুবিধা করতে পারছেন না তারা। এজন্য পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা।

Comments are closed.

More News Of This Category