শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফিরে দেখা রাজনীতি

মোঃ খায়রুল কবির আবাদ 


যেমন পলাশীর প্রান্তের সিরাজউদ্দৌলাকে তেমনি আবার বাঙালী আরেকটি বেঈমানী ও বিশ্বাঘাতকতার ঘটনা ঘটালো। আমি কি তাদেরই একজন? যদিও রাজনৈতিক ভাবনা চিন্তা কখনো আসেনি তবে বাঙালি হিসাবে এই লোকটির প্রতি আমার কৃতজ্ঞতাবোধ জাগ্রত হল। উনি তো ইয়যে ৭ মার্চ ভাষনে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। তার আগে সংগ্রাম করে, জীবনের যৌবনের বিরাট অংশ জেল খেটে এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট থেকেছেন। কত সন্তান জীবন দিয়েছিল। স্বাধীনতার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল তারই অংশ হিসাবে। উনাকেই এই জাতি ভোটের মাধ্যমে দেশের বৈধ প্রতিনিধি বানিয়েছেন। তারই ডাকে হাজিগঞ্জ তথা সমগ্র বাঙলায় যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল সেই সময় থেকে। ৭ মার্চের পর থেকেই হাজিগঞ্জেও শুরু যুবকদের অস্র হাতে ট্রেনিং দেয়া। মনে পড়ে গেল সেই সব কথা। কেননা উনার মত লম্বা বজ্র কন্ঠের নির্ভেজাল দেশপ্রেমিক আমি আজও দেখিনি। ভাবলাম নিজেতো এই ভার মুক্ত হতে হবে। সেই থেকে নিজ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমার ঋন শোধের চেষ্টা। লাভ একটাই ঋন বহিবার কষ্ট লাগবের ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। দলের সহকর্মী ও বিশ্বাস ঘাতক মোশতাক সহ অনেকে যাদের হাতে ধরে রাজনীতি শিখিয়েছেন, সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে দেখিয়েছেন পিছনের বন্ধুকের নলের বিশ্বাসঘাতকতার গুলিতে মহামানবকে হত্যা করে পাকিস্তানী কায়দায় শাসনে ফিরে যাওয়া।

৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা, মুক্তিকে বিসর্জন দিয়ে সামরিক শাসনে নিয়ে যাওয়া। যা ছিল কতই না বেদনার, কষ্টের বলা কি সম্ভব? এই ভাবে ঢাকা শহরে ঘুরলাম ৭ নভেম্বর পর্যন্ত। ইতিমধ্যে ৩ থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত কু পাল্টা কুর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সেনাবাহিনীর মানুষদের হত্যা করে জানান দিচ্ছিল কেন যুদ্ধ করে স্বাধীনতা পেলাম। ইতিহাসকে অর্জনকে সম্পুর্ন উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেয়া। ঐ দিন ঘোষণা হচ্ছিল শহীদ মিনারে জিয়া, জলিল, রব, তাহের প্রমুখ বক্তৃতা দিবেন। ভাবলাম যাই একবার দেখি সেখানো কি হচ্ছে। সাইকেল চেপে যেতে লাগলাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভিতর দিয়ে রোকেয়া হল হয়ে যেই শহীদ মিনারের দিকে যাবো অমনি সেনাবাহিনীর দাবড়ানি। তড়িঘড়ি করে কোথায় যাব? ঢুকে পড়লাম মেয়েদের রোকেয়া হলের গেইটের ভিতর।কিছুক্ষন পর বের হয়ে একবারে বাসায়। বুঝে গেলাম জাসদের কপালে দুর্যোগ আছে। তাই হলো গ্রেফতার সব। পরে ফাঁসি, জেল ইত্যাদি। এখানে উল্লেখ্য যে পিছনের নাটেরগুরু কিন্তু আস্তে আস্তে দৃশ্যপটে হাজির হয়। জিয়াউর রহমানের ক্ষেত্রে আমার এরকমই মনে হয়।

কোনো দলে যোগ না দিয়েই শুরু হলো আমার ব্যক্তিগত ভাবে ঋন শোধাবার পালা মানুষকে বুঝানো। জেনারেল জিয়া ইনিয়ে, বিনিয়ে নাটক করে ক্ষমতায় এলেন, যদিও পর্দার আড়ালে তিনিই ছিলেন কিন্তু এখন পুরো ক্ষমতায়। প্রথমে আওয়ামী লেবাসধারী বিশ্বাস ঘাতক মোশতাক, পরে আনলেন দুনিয়াকে সাধুগিরি দেখাতে বিচারপতি সায়েম। শেষ দৃশ্যে উর্দুি ওয়ালা জেনারেল। ইতিমধ্যে সাফ করে দিলেন সম্ভাবনাময় বাধাগুলো সব সহমুক্তিযোদ্ধাদের। সমর্থন আদায় করলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরুধী গ্রুপ দেশগুলোর। পূর্ন বাসিত করলেন সকল স্বাধীনতা বিরুধীদের দক্ষতায় সহিত। নিজেকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা, বীর উত্তম সেক্টর কমান্ডার হিসাবে। দিলেন হা বা না ভোট যাকে বলে গণভোট। হাজীগঞ্জ নিজ গ্রামের বাড়ির মাথায় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে প্রথম জেনারেল সাহেবের সামনে সিল দিয়ে একটি স্যালুট দিলাম শত হলেও বঙ্গবন্ধুর দেওয়া বীর উত্তম খেতাবধারী এবং জেনারেল পদ প্রাপ্তি সম্মানতো করতেই হয়। আবার মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগষ্টে কালো রাতে যে আমাদের ললাটে বেঈমানী তিলক পড়িয়েছেন। তারপর ভাবলাম জেনারেল সাহেবের সামনে পিছনে গার্ড না থাকলে তো মানায় না। তাই সামনে পিছনে দুটো সিল মেরে ইজ্জত করলাম। ফলাফল আগেই জানতাম।

ইতিমধ্যে দল কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত। চাঁদপুরের বঙ্গবন্ধু প্রেমী হয়ে গেলেন আওয়ামীলীগ ( মিজান) তার দলে গেলেন হাজীগঞ্জের উল্লেখযোগ্য জনাব ডাঃ আব্দুস সাত্তার এবং তফাজ্জল হায়দার চৌধুরী ( নসু)। জিয়া ১৯৭৯ জাতীয় সংসদের নির্বাচন দিচ্ছেন। কারণ ইতিমধ্যে উনার প্রেসিডেন্ট পদ গণভোটের মাধ্যমে জায়েজ করে সরকারি খরচ ও ক্ষমতায় বিভিন্ন দল ও সুবিধাবাদীদের (তখনকার বাম দলগুলো) নিয়ে কয়েকটি স্তর পেরিয়ে বিএনপি নামক একটি দল গঠন করলেন। আওয়ামীলীগের অনেক নেতা চলে গেলেন তার সাথে। অন্যরা এক হতে না পেরে সম্ভবতঃ মালেক উকিল বা জোহরা তাজউদ্দীনের নেতৃত্বে নৌকা প্রতীক নিয়ে এবং মিজান সাহেব মই প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে গেলেন। হাজীগঞ্জ থেকে ( তখন শাহারাস্তি আলাদা থানা হয়নি) মামা আবদুর রব নৌকা এবং মই নিয়ে ডাঃ আব্দুস সাত্তার আর মুসলিমলীগ পরিবারের সদস্য এম. এ. মতিন যদিও ন্যাপ করতেন বলে প্রচারিত আসলে শিক্ষকতা করতেন বিএনপির প্রার্থী হিসাবে ধানের শীর্ষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন।

ফলশ্রুতিতে রব মামা ডাক্তার সাত্তার যে অল্প সংখ্যক ভোট পেয়েছিলেন তার থেকে কম ভোটে মতিন সাহেবের কাছে হেরে যান। এটিই আমার রাজনৈতিক নির্বাচনে অংশ গ্রহণের প্রথম প্রচার ছিল। হাজীগঞ্জের ঐতিহাসিক গোল দরজা ঘর ছিল প্রচারের সেল। তখন আমি এম,এস,এস ( মাষ্টার অব সোশাল সাইসেন্স) বিষয় অর্থনীতি পরিক্ষা দিয়েছি বা দিব এরকম হবে।

১৯৭৯ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বিএনপি শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী করে সরকার গঠন করে। যদিও ক্ষমতার মূল কেন্দ্র ছিল জিয়া। এরশাদ নিযুক্ত হন সেনাবাহিনী প্রধান। বছর খানেক না যেতেই চট্রগ্রাম সার্কিট হাউসে সামরিক বাহিনীর বিদ্রোহে জিয়া নিহত হন এবং মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল মঞ্জুরকে বিচারবহির্ভূত ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়। উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাত্তার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হন৷ কিন্তু ক্ষমতার কুটচালে তিনিও ক্ষমতাচ্যুত হন। এরশাদ জিয়াউর রহমানের মত একই কায়দায় ক্ষমতায় আসেন এবং জাতীয় পার্টি গঠন করেন। সেই নীতি হীন সুবিধাবাদী গ্রুপ বিএনপি থেকে যোগ দেন। চলে যান মই প্রতীকের মিজান আওয়ামী লীগ। সুতরাং আওয়ামী লীগ অনেকটা আসল স্বকীয়তা ফিরে পায় যদিও মহিউদ্দিন সাহেবও রাজ্জাক ভাই কিন্তু বাকশাল নামে আলাদা দল চালিয়ে যান। জিয়ার শাসনের শেষ সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাধা উপেক্ষা করে ভারতের নির্বাসন থেকে নিজের দেশের মাটিতে ফিরে আসেন এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহন করেন। এতে দলের অগনিত নেতা কর্মীর মনে প্রান ফিরে আসে। তাই আবার তারা সবাই একই পতাকা তলে একত্রিত হতে থাকে।

জিয়ার হত্যার পর তার বিধবা স্ত্রী খালেদা জিয়া বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব নেন। আমি কিন্তু কোনো সক্রিয় রাজনীতি না করে মধ্যবিত্তের সন্তান হিসাবে কর্ম ক্ষেত্রে ঢুকে পড়ি ও জীবন সংগ্রামে ব্যস্ত হয়ে যাই। এরশাদ সরকার ১৯৮৬ সালে জাতীয় নির্বাচন দেয় এবং আওয়ামী লীগ তাতে অংশগ্রহণ করে। মামা আবদুর রব এবার হাজিগঞ্জ থেকে সাংসদ হয়ে জীবনে প্রথম বারের মতো পার্লামেন্টে যেতে পারেন। সেই নির্বাচনে আমি উনার প্রধান নির্বাচনের এজেন্ট ছিলাম। কিন্তু বিএনপি অংশ না নেয়ায় সংসদ বেশি সময় টিকলো না। ১৯৮৮ সালে এরশাদ আবার জাতীয় নির্বাচন দেন কিন্তু এবার প্রধান দলগুলো অংশ নেয়নি। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে মিজানুর রহমান চৌধুরী এরশাদ সাহেবের দলে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হন।

মনে পড়ে সে সময় ( সঠিক সাল মনে নই) হাজিগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনে রব মামা আবদুর রশিদকে তার বাবা চাচাকে বলে বা বলা যায় জোর করে নিয়ে এসে প্রার্থী করেন, যদিও রশিদ তখনও দলে যোগ দেননি।. আলী আজ্জম মজুমদার ও হোসেন ইমাম হায়দার কমিটির সময় আমি ও বন্ধু দীলিপ অনেকটা জোর করে রশীদকে সিনিয়র সহ সভাপতি হতে বাধ্য করি। সে তখন পৌরসভা চেয়ারম্যান, তার যুক্তি ছিল তাকে আওয়ামী লীগ ছাড়াও অন্য দলের এবং দলের বাইরের মানুষ ভোট দিয়েছিল। আমি বন্ধু রশিদের জন্য নির্বাচনে রঙিন পোস্টার, লিফলেট, ব্যাজ ইত্যাদি নিজ খরচে ছাপিয়ে দেই, নিজেও এলাকায় গিয়ে তার জন্য কাজ করি। কিন্তু সে জাতীয় পার্টি নসু চৌধুরীর কাছে হেরে যায়। সেই সময় মিজানুর রহমান সাহেব আমার দুলাভাই মান্নান সাহেব ও হাজিগঞ্জ কাঠালি গ্রামের মমিন মিয়ার মাধ্যমে মামা রব সাহেবকে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিলে মন্ত্রীত্বের প্রস্তাব দেন। রব সাহেব তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে চাঁদপুর এবং ঢাকার ছাত্র লীগের প্রায় সকল কেন্দ্রীয় নেতাসহ অনেক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা রব সাহেবের (শশুর) ধানমণ্ডি পাঁচ নম্বর সড়কের বাসায় যাতায়াত করতেন এবং যোগাযোগ রক্ষা করতেন। এভাবে আওয়ামী লীগ এরশাদের পতনে ভুমিকা রাখে। আমি থাকতাম গ্রীন রোডের কাঠাল বাগানে।

সামনের বাসা ছিল শহীদ ফাত্তাহদের। সেই গোলির মাথায় গ্রীন রোডে ফাত্তাহ গুলিতে মারা যান। নূর হোসেন এবং ডাক্তার মিলন মারা যান। যেমন ১৯৭১ সালে এবং আগে বাঙালি বেঈমান দেখেছি তেমনি স্বাধীনতা পরবর্তী কয়েকবার এই জাতি বেঈমান দেখতে পেয়েছে কিন্তু আমার মনে হয় ভালো ভাবে এখনো চিনতে পারেনি। তাইতো উঠা নামা উত্থান প্রতনের মাঝে চলছে এই দেশ জাতি। একসময় প্রধান বিরোধী দলগুলো একত্রিত হয়ে এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুললো যার ফলশ্রুতিতে সশস্ত্র বাহিনী সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় এবং এরশাদ সরকার পদত্যাগ করেন। তখন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ছিলেন এরশাদ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী। কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন।

১৯৯১ সালের নির্বাচনে হাজিগঞ্জ শাহারাস্তি সংসদীয় এলাকা থেকে প্রার্থী হন আওয়ামী লীগের সৎ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিক আবদুর রব নৌকা প্রতীক এবং এম, এ, মতিন বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক। কিন্তু কিছু আওয়ামী লীগ দুষ্ট নেতা, রব সাহেবের নমিনেশন মেনে নিতে না পেরে শাহারাস্তির সাবেক সচিব ড. সাত্তার সাহেবকে হাওয়া দিলেন এবং পরামর্শ দিলেন রব সাহেবকে অর্থ ও দুই একজন ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়ে দেবার। রব সাহেবের সাথে সাত্তার সাহেবের সম্পর্ক ছিল গভীর। সাত্তার সাহেব নমিনেশন না পেয়ে রব সাহেবের কাছে নিজে বা অন্য কারো মাধ্যমে হউক প্রস্তাব পাঠালেন। প্রস্তাব পাওয়া /শুনা মাত্র তিনি প্রচন্ড অপমানিত হলেন। সাথে সাথে সিদ্ধান্ত নিলেন কোনভাবেই এই সব মানুষের সাথে আপোষ ও আত্মসমর্পণ করবেন না। এর মাঝে যেই সব মানুষকে রব সাহেব হাজিগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতা বানিয়েছেন তারা সাত্তার সাহেবকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদন্ধিতা করতে মাঠে নামিয়ে দিলেন।

এদের অনেকেই এখনো হাজিগঞ্জ রাজনীতিতে আছেন প্রভাবহীন ভাবে। এদের কেউ কেউ আবার ত্যাগী নেতা হিসাবে পরিচয় দেন। আমি অবাক হই ভাবি, আসলে বেঈমানরা কখনো মানুষ হয় না। আর আমলা সাত্তার সাহেব তাদের তালে পড়ে বিরাট ভুল করে বসলেন। ফলশ্রুতিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পাশ করতে পারলেন না বা পাশ করার কথাও নয় যেহেতু ভোট ব্যাংক ভাগ হয়ে গিয়েছিল। এই নীতিহীন হিংসাত্মক দল থেকে দলের ক্ষতি করা লোকগুলোর জন্য হাজিগঞ্জ শাহারাস্তি বাসী এলাকার এই দুই দিকপালকে দুই বছরের মধ্যে হারালেন। দল হয়ে গেল নীতিবান আদর্শ বঙ্গবন্ধুর সৈনিক শুন্য। এখানে উল্লেখ্য করতে হয় তথাকথিত আওয়ামী লীগের নামধারী নেতারাই রব সাহেবের মতো একজন স্পষ্টবাদী সৎ ও আদর্শ নেতার বিরুদ্ধে তথা দলের প্রার্থী, নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে নিজেদের স্বার্থে মোশতাকের প্রেতাত্মা হয়ে ষড়যন্ত্র করেছিল যদিও তাদের কেউই হাজিগঞ্জ রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেননি এই অনৈতিকতার জন্য। অথচ ন্যায় নীতি আদর্শ ধারণ করলে আবদুর রব পরবর্তী আওয়ামী রাজনীতিতে তারাই দিকপাল হতে পারতেন। তাদের নাম উল্লেখ না করলেই সহজে বুঝতে পারছেন তারা কারা? তারা ভেবে ছিল এদের শুন্যতায় তারা দলের নেতা হয়ে নমিনেশন পেয়ে ষড়যন্ত্রের ফসল ঘরে তুলবেন। কিন্তু বিধাতা তখন অন্য কিছু ভেবে রেখেছিলেন। ( এখানে সেই সকল অপদার্থ আদর্শহীন রাজনীতিবিদদের নাম উল্লেখ করলাম না। কারণ তারা কর্মের কিছুটা ফল ইতিমধ্যে পেয়ে গেছেন এবং অনেকেই জীবিত নেই তাই)।

আমি এদের ষড়যন্ত্রের কথা নাম ও তাদের স্বাক্ষর সহ আবদুর রব ভক্ত ত্যাগী ছাত্র, আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম মালেক প্রমাণ কাগজ দিয়েছিলেন, যা অনেক বছর রেখে তা ফেলে দিয়েছি। এখনো সেই সকল নীতিহীন হিংসাত্মক মানুষগুলো দলের প্রতীকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যদিও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কারণে সফল হয়নি। এদের চরিত্রের কারণেই নেত্রী অবসরপ্রাপ্ত আমলা, সেনা কর্মকর্তা প্রমূখকে দলের নমিনেশন দিয়ে দলকে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় রাখতে সচেষ্ট এবং দেশকে উন্নতির দিকে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন। চাঁদপুর জেলায় একমাত্র দীপু মনি, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বর্তমানে নূরুল আলম রুহুল), আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল প্রমুখ ছাড়া এখন আওয়ামী লীগের কেউ নেই। যদিও ত্যাগী আওয়ামী পরিবারের কেউ কেউ অন্য দল থেকে আগতদের সাথে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে আছেন। কিন্তু সুবিধাবাদীদের ভিড়ে তারা কুলিয়ে উঠতে পারছে না। নিভু নিভু করে জ্বলছে আর নিভছে। এদের টাকা, সম্পদ নেই কিভাবে পেরে উঠবে অন্যদের সাথে। এখন যে আদর্শ ও সততার মূল্য শেষ হয়ে যাচ্ছে।

তৃতীয় পর্ব……. আসছে

Comments are closed.

More News Of This Category