চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে স্কুল মাঠে পৌরসভার ময়লার স্তুপ দিচ্ছে পৌর কতৃপক্ষ। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে হাজারো শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ।ফলে দুর্ভোগ, দুর্দশা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়,পৌরসভার ঐতিহ্যবাহী মেহের কালিবাড়ী বাজারে অবস্থিত নিজ মেহের মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এখন পৌরসভার ময়লার ভাগাড়।পাশেই রয়েছে শাহরাস্তি পৌর একাডেমী ও সোনালী ব্যাংক শাহরাস্তি উপজেলা শাখা।

উপজেলার সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ীক কেন্দ্র মেহের কালিবাড়ী। অথচ দীর্ঘদিন ধরে নিরাপদ স্থান হিসেবে এখানে ময়লা ফেলে যাচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ । পৌর শহরের একমাত্র খেলাধুলার ঐতিহাসিক মাঠ এটি। প্রতিদিন বিকেলে বিভিন্ন স্কুল কলেজের স্থানীয় শিক্ষার্থীরা কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে এই মাঠে খেলাধুলায় মেতে উঠতো। শিশু কিশোরদের খেলাধুলা আর হৈ-হুল্লোড়ে প্রাণবন্ত মাঠের চারপাশে দাঁড়িয়ে পড়তো বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি পেশার হাজারো মানুষ। তবে ময়লা ফেলার পর থেকে দুর্গন্ধের কারণে ধীরে ধীরে মাঠটি খেলাধুলার অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। মাঠের দুই প্রান্তে একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কেজি স্কুল রয়েছে। তিনটি স্কুলের শত শত শিক্ষার্থী, একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা – কর্মচারী,আগত গ্রাহক, বাজারের ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও পথচারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনায় না নিয়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভাগাড় স্থাপন করায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।
এরকম ব্যস্ততম জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যে পৌর কর্তৃপক্ষের এধরনের কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও সচেতন মহল।
নিজ মেহের মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আযাদ হোসেন জানান, ময়লার কারনে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে, শিক্ষক – শিক্ষার্থী সকলেই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।
শাহরাস্তি পৌর একাডেমীর অধ্যক্ষ আলী আজগর মিয়াজী বলেন, আমি নির্যাতনের শিকার। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের নিষেধ করা হলে তারা পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখেন বলে জানান।
বাজারের চা বিক্রেতা তারেক হোসেন জানান, দুর্গন্ধের কারণে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফল ব্যবসায়ী বিপ্লব মজুমদার বলেন, আমরা অনেক কষ্টে এখানে বসে আছি ময়লার গন্ধে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। বাজারে কেনাকাটা করতে আসা উপজেলার নরিংপুর গ্রামের নেয়ামত উল্লাহ বলেন, এমন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভাগাড় স্থাপন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা নয় বরং অদূরদর্শিতা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, শাহরাস্তি পৌরসভার প্রধান সহকারী নজরুল ইসলাম বলেন, জায়গা না থাকায় আপাতত এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ময়লাগুলো অন্যত্রে সরিয়ে নেয়া হবে।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ শেখ জানান, পৌর সভার ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোন জায়গা না থাকায় মেহের কালিবাড়ী মাঠে ফেলা হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি। তবে বৃষ্টি কমে আসলে অবশ্যই মাঠ থেকে ময়লা গুলো সরিয়ে নেয়া হবে।
অভিযোগ উঠে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ তোফায়েল দীর্ঘদিন এ উপজেলায় কর্মরত থাকার সুবাধে পৌরসভার অনেককিছুই তাঁর নির্দেশে চলে।অনিয়ম দুর্নীতি করে জলবায়ু ফান্ডের অর্থ হাতিয়ে নিতেই স্কুল মাঠকে ময়লার ভাগাড় করা হয়েছে তাঁরই ইশারায়।তবে তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের সত্যতা নেই বলে জানান শেখ তোফায়েল