শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে অবশেষে ক্ষমা চাইলেন কচুয়ার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুর রহমান

 

বিশেষ প্রতিনিধি,চাঁদপুর


চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে শেয়ার বিজের চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধিকে অবরুদ্ধ করে রেখে লাঞ্চিত করার ঘটনা ঘটেছে।

১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর দুইটার পর কচুয়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে,শেয়ার বিজের চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি সিনিয়র সাংবাদিক বেলায়েত সুমন ঐ দিন পেশাগত কাজে সংবাদ সংগ্রহের জন্য কচুয়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অফিসে যান। সেখানে তিনি সাংবাদিক বেলায়েত সুমনকে অফিসে বসিয়ে রেখে কোনো কিছু না বলেই গেইটে তালা লাগিয়ে দেন এবং ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করেন। তাৎক্ষণিক নিরাপত্তার কথা ভেবে সে সময় শেয়ার বিজ প্রতিনিধি চাঁদপুর জেলা প্রশাসককে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেন।জেলা প্রশাসক ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন।


শেয়ার বিজ প্রতিনিধিকে অবরুদ্ধ করার পর চিন্তিত কচুয়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুর রহমান


এ বিষয়ে স্থানীয় এমপি ড. সেলিম মাহমুদ
ব্যক্তিগত সহকারী সাইফুল ইসলাম বাবুর মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে ইউএনও এবং স্থানীয় সাংবাদিকদের বিষয়টি মিমাংসার নির্দেশ দেন।

এরই মধ্যে কচুয়া উপজেলার ইউএনও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে বলেন, শেয়ার বিজ প্রতিনিধির সাথে কথা বলে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য। কচুয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের কয়েকজন সাংবাদিক শেয়ার বিজ প্রতিনিধির পরিচয় জেনে বিষয়টি মিমাংসা করে দেন তাৎক্ষণিক।


ঘুষ গ্রহণকালে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুর রহমান


কচুয়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুর রহমান শেয়ার বিজ প্রতিনিধিকে অন্যায়ভাবে অবরুদ্ধ করার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং নিজের ভুল হয়েছে বলে হাতজোড় করে দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি ওখানেই শেষ করতে বলেন।

এ ঘটনা সম্পর্কে শেয়ার বিজ প্রতিনিধি কচুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির কে অবহিত করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে এ বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে শেয়ার বিজ প্রতিনিধিকে অবরুদ্ধ না করে দ্রুত গেইটের তালা খুলে দিতে পরামর্শ দেন। কিন্তু হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা কারও কথা না শুনে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার নন্দনপুরের নাসির নামে তৃতীয় মাত্রা নামে একটি পত্রিকার চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি পরিচয়দানকারী এক সাংবাদিক ঘটনাস্থলে আসবেন বলে অপেক্ষা করেন।ঐ সাংবাদিক ঘটনাস্থলে এসে শেয়ার বিজ প্রতিনিধিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।এ সময় শেয়ার বিজ প্রতিনিধি কোনো কথা না বলে চুপ থাকেন। তখন তৃতীয় মাত্রার ঐ সাংবাদিক নাসির শেয়ার বিজ প্রতিনিধিকে ব্লাকমেইল করতে চান এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার পক্ষ নিয়ে শেয়ার বিজ প্রতিনিধির সাথে অশোভন আচরণ করেন যা একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তির আচরণের চেয়েও নিকৃষ্ট। ঐ সময় স্থানীয় প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা নাসির নামের ঐ সাংবাদিককে অশোভন আচরণ করতে বারণ করেন।তবুও নাসির নামের সাংবাদিক শেয়ার বিজ প্রতিনিধির মোবাইল ভেঙে ফেলতে চান।চাঁদপুরের ডিসির সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছেন বলে নিজের অস্তিত্ব জাহির করার চেষ্টা করেন।সেই মুহুর্তে একটি তার মোবাইলে কল আসার অযুহাতে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।


 

নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত আবদুর রহমান


উল্লেখ্য,কচুয়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অফিসে ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে টাকা গুনতে দেখা গেছে।এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার পক্ষে কাজ করেন কতিপয় সাংবাদিক।

পরবর্তীতে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুর রহমান শেয়ার বিজ প্রতিনিধির মুঠোফোনে কল দিয়ে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু শেয়ার বিজ প্রতিনিধি সেই ঘুষ নেয়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়া কর্মকর্তার ফোন রিসিভ করেননি।

Comments are closed.

More News Of This Category