ক্রাইম রিপোর্ট ডেস্কঃ আফগানিস্তানের কয়েকটি অঞ্চলে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানের একাধিক হামলায় অন্তত সাত পুলিশ সদস্য ও তিন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। গতকাল এ হামলার ঘটনা ঘটে। আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনী ও সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে প্রায় প্রতিদিনই হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি। খবর পিটিআই।
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের সারি পুল প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি চেক পয়েন্টে হামলা চালায় তালেবানরা। প্রাদেশিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ হামলায় অন্তত চার পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। প্রাদেশিক কাউন্সিলের প্রধান মোহাম্মদ নূর রহমানি জানিয়েছেন, প্রদেশটির রাজধানী শহরে গত শনিবারের হামলায় আরো অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
অন্য এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত গজনি প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর চেক পয়েন্টে হামলা চালিয়েছে তালেবান জঙ্গিরা। এ হামলায় অন্তত তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
প্রাদেশিক পুলিশপ্রধানের মুখপাত্র আহমাদ খান সিরাত জানিয়েছেন, বন্দুকযুদ্ধে সাত জঙ্গি পুলিশের হাতে নিহত হয়েছে। গজনিতে হামলার দায় স্বীকার করলেও সারি পুলে হামলার বিষয়ে এখনো কোনো বিবৃতি দেয়নি তালেবান।
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের নাংগরহার প্রদেশের স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রদেশটিতে জোড়া বোমা হামলায় অন্তত তিন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র আতাউল্লাহ খোগেনি জানিয়েছেন, প্রদেশটির রাজধানী জালালাবাদে বোমা হামলায় আরো অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। খোগেনি জানিয়েছেন, নিহত ও আহতদের সবাই সাধারণ নাগরিক।
নাংগরহারে হামলার দায় তাত্ক্ষণিকভাবে কেউ স্বীকার করেনি। তবে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে, বিশেষ করে নাংগরহারে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান ও ইসলামিক স্টেট (আইএস) উভয়ই সক্রিয় রয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চলের বাদঘিস প্রদেশের বালা মুরগাব জেলার সরকার ও সেনা নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তিনদিন ধরে হামলা চালাচ্ছে তালেবানরা। প্রাদেশিক কাউন্সিলের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনা করার অনুমতি না থাকায় তিনি এ শর্ত আরোপ করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার, বাদঘিসের নিরাপত্তা বাহিনীর চেক পয়েন্ট ও সরকার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। এসব হামলায় অন্তত ২০ সেনা ও পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য জানান, বৃহস্পতিবার থেকেই নিরাপত্তা বাহিনী ও তালেবানদের মধ্যে লড়াই চলছে। তালেবানের মুখপাত্র কারি ইউসুফ আহমাদি গণমাধ্যমের উদ্দেশে দেয়া এক বিবৃতিতে বাদঘিসে হামলার দায় স্বীকার করেছেন। আনুমানিক দুই হাজার তালেবান সদস্য এ হামলার সঙ্গে জড়িত। অন্যদিকে সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৬০০ সদস্য এদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
বালা মুরগাবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধ বন্ধ রাখলে তালেবানরা দাবি করে, তারা কিছু সময়ের জন্য আব কামারি জেলায় অবস্থিত নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। কিন্তু প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র জামশিদ সাহাবি বলেন, তালেবানরা শুধু কিছু চেক পয়েন্ট ঘিরে রেখেছিল। জেলার প্রধান কার্যালয় তারা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি।