শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুরে স্বামীর যৌতুক মামলায় স্ত্রী শ্রীঘরে

 

 

মঞ্জুর আলম বেপারী (শাহরাস্তি)চাঁদপুর


চাঁদপুরে স্বামীর দায়ের করা  যৌতুক মামলায় স্ত্রীকে জেলে প্রেরণ করলো বিজ্ঞ বিচারক ও আমলী আদালত শাহরাস্তি এবং সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট -০৩ চাঁদপুর।

চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার বানিয়াচোঁ গ্রামের খন্দকার মো. মনির হোসেন ২০১৮ সালের যৌতুক আইনের ৩ ধারায় তাহার স্ত্রী মিনোয়ারা বেগম, পিতা ইমান আলী, মাতা-শাহানারা বেগম, সাং শাকপুর ( জলিল ভূইয়া বাড়ি), বরুড়া, কুমিল্লা এর বিরুদ্ধে সিআর-১৯৯/১৯ ইং(শাহরাস্তি) নং মোকদ্দমা দায়ের করেন ।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মামলার আসামী মিনোয়ারা বেগম বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য তাহার স্বামীর সাথে সব সময় খারাপ আচরণ করতো এবং সে বেপরোয়া জীবন জাপনে অভ্যস্ত ছিলো। গত ০১/০১/১৭ইং তারিখে কাউকে কিছু না বলে না জানিয়ে তার স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে জনৈক নাজমুল হকের সাথে অবৈধভাবে বসবাস করে। পরবর্তীতে ০৬/০৭/১৭ ইং তারিখে বাদীকে তালাক প্রদান করে উক্ত তালাকের তথ্য গোপন রেখে পুনরায় বাদীর সংসারে ফিরে আসে।পরবর্তীকে বাদীকে কুমিল্লায় আটক করে দেনমোহর বাড়িয়ে পুনরায় কাবিননামা সৃজন করেন।

অতঃপর আসামি মিনোয়ারা বেগম পুনরায় যৌতুক দাবী করে তাহার আত্মীয় স্বজনসহ আসামি নিজে বাদীকে প্রতিনিয়ত শারীরিক মানসিক নির্যাতন করতে থাকে এবং আসামি তার মোবাইল ফোন নম্বর হতে বাদীর নিকট যৌতুক দাবী করে বাদীকে হুমকি ধমকি দিতে থাকেন।।
এই ঘটনার ধারাবাহিকতায় আসামী পুনরায় যৌতুক দাবী করে বিগত ০৯/০৬/১৯ তারিখে শিশু পুত্র গোলাম মুহাম্মদ রাব্বিকে রেখে তার পিত্রালয়ে চলে যায় ।এতে বাদী উপায়ান্ত না পাইয়া উক্ত মোকদ্দমা আনয়ন করলে মাননীয় বিচারক ও আমলি আদালত শাহরাস্তি থানাকে উক্ত মোকদ্দমায় তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দিতে আদেশ দিলে শাহরাস্তি থানার ওসি তদন্ত শহিদুল ইসলাম মোকদ্দমা তদন্ত করে অফিসার ইনচার্জ শাহ আলমের মাধ্যমে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করেন ।তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আদালত আসামি মিনোয়ারা বেগম এর বিরুদ্ধে সমন জারি করলে আসামী ০৯/০৩/২০ইং তারিখে আদালতে জামিন নিতে আসলে বিজ্ঞ আদালত শুনানীয়ান্তে তাকে জেলে প্রেরণ করেন।

বাদীপক্ষের বিজ্ঞ কৌশলি মোঃ মহসীন খান বলেন, যৌতুক নিরোধ আইনের কিছু ক্ষেত্রে অপব্যবহার করে নারীরা পারিবারিক বিরোধ হলেই পুরুষদের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা দিয়ে পুরুষদের হয়রানি করেন।অনেক পুরুষ আইন না জানায় নারী দ্বারা নির্যাতিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় না। উক্ত আইনে পুরুষরাও যৌতুক লোভী নারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে প্রতিকার পাইতে পারে। এই মামলা ও বিজ্ঞ আদালতের আজকের আদেশ একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে।স্বামীর করা যৌতুক মামলায় আসামী স্ত্রী মিনোয়ারা বেগম এর পক্ষে আইনজীবী বিজ্ঞ আইনজীবী ছিলেন মো. হান্নান কাজী ।

এই  বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এক্টিভিটিস ফাউন্ডেশন চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক বেলায়েত সুমন বলেন, দেশে স্ত্রী কতৃক স্বামী নির্যাতনের যথাযথ আইন না থাকায় প্রতিনিয়তই  সামান্য পারিবারিক বিরোধ সৃষ্টি হলেই দুষ্ট নারীরা পুরুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা করে পুরুষদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে টাকাকড়ি হাতিয়ে নেয়ার একটা রেওয়াজ চালু হয়েছে।এতে করে স্ত্রীর দায়ের করা মিথ্যা অভিযোগে অনেক পূরুষই সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসতে বাধ্য হচ্ছে ।দেশের প্রচলিত যৌতুক নিরোধ আইনে মহিলাদের পাশাপাশি পূরুষও প্রতিকার পেতে পারে যদি নির্যাতিত কোনো পূরুষ আইনের শরণাপন্ন হয়।

Comments are closed.

More News Of This Category