বুধবার, ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্দরবন ও টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৫

 ডেস্ক রিপোর্ট []কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকায় পৃথক দুটি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পাঁচ ব্যক্তির নিহতের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোমবার রাতে টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই রোহিঙ্গা নাগরিক নিহত হয়। পুলিশ বলছে, তারা মাদক পাচারকারী। আর সকালে সুন্দরবনে নিহত তিনজনকে দস্যু দাবি করেছে র‌্যাব।

টেকনাফে নিহতরা হলেন- নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাঁচা মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ আলম ও জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আলী হোসেনের পুত্র মোহাম্মদ রফিক।

পুলিশ বলছে, তারা মাদক পাচারকারী। ঘটনাস্থলে দু’টি দেশীয় তৈরী বন্দুক, ৭ রাউন্ড গুলি ও ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

টেকনাফ মডেল থানার (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের ভাষ্য, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজারের টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড জাদিমুরা এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। উপস্থিতি টের এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণ করে মাদক কারবারীরা। আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ময়নাতদন্তের জন্য নিহতদের লাশ কক্সবাজার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে ওসি আরও জানান, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন।

এদিকে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা দিলেও সোমবার সকালে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিন ‘দস্যুর’ নিহতের কথা জানিয়েছে র‌্যাব। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলাধীন খোন্তা কোদালিয়া খাল এলাকায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

নিহতদের একজনকে পান্না ওরফে রানার বাহিনী প্রধান বলে দাবি করলেও বাকি দুজনের বিস্তারিত পরিচয় জানাতে পারেনি র‌্যাব। নিহত তিনজনের বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

ঘটনাস্থল এলাকায় তল্লাশি করে চারটি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং বেশ কয়েক রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করারও কথা জানায় র‌্যাব।

র‌্যাব খুলনা-৬ এর অপারেশন কর্মকর্তা মেজর শামীম সরকারের ভাষ্য, একদল দস্যু সুন্দরবনে অবস্থান করছে এমন খবর পেয়ে রবিবার রাতে র‌্যাব সদস্যরা সুন্দরবনে অভিযান শুরু করে। সোমবার সকাল ৭টার দিকে সুন্দরবনের চরাপুটিয়া এলাকার খোন্তা কোদালিয়া খালে পৌঁছালে একটি নৌকার মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়জনকে দেখতে পাওয়া যায়। তাদের চ্যালেঞ্জ করলে দস্যুরা নৌকা থেকে উঠে দৌড়ে বনের মধ্যে পালানোর চেষ্টা কর। এসময় দস্যুদের ধাওয়া দিলে তারা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়।

‘গোলাগুলির’ এক পর্যায়ে তারা বন তল্লাশি করে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বাহিনী প্রধান রানাসহ তিন দস্যুকে উদ্ধার করে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তাদের তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন’, বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩১ মে সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু মাস্টার বাহিনী প্রধানসহ ১০ দস্যুর আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে দস্যুরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের ৩২টি বাহিনী প্রধানসহ ৩২৮ জন দস্যু আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণ করা এসব দস্যুরা ৪৬২টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ২৩ হাজার রাউন্ডের বেশি গোলাবারুদ্ধ জমা দেয়।

এরপর ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন ঢাকা থেকে বাগেরহাট শেখ হেলাল উদ্দীন স্টেডিয়ামে সুন্দরবনের দস্যুদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন এবং সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন।

Comments are closed.

More News Of This Category