মঙ্গলবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাজীগঞ্জে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সাজানো মামলায় স্বামী কারাগারে

 

চাঁদপুর প্রতিনিধি 


চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সাজানো মামলায় জেল খাটছেন স্বামী আরিফ হোসেন (৩০)।আরিফকে ফাঁসাতে তাঁর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে ভুয়া মেডিক্যাল ডকুমেন্ট তৈরি করে আরিফের বিরুদ্ধে ভ্রুন হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করে।

জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার মনতলা ভূঁইয়া বাড়ির হাসান ভূঁইয়ার কন্যা মরিয়ম আক্তারের (১৮) সাথে হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭ নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের আবদুল মান্নানের পূত্র আরিফ হোসেনের সাথে ইসলামী শরিয়ত মতে হাজেরানা মজলিশে ২০২০ সালের মার্চ মাসে দুই লক্ষ টাকা দেনমোহরে পঞ্চাশ হাজার টাকা উসুল মূলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকেই মরিয়ম উশৃংখল জীবন যাপন করতে শুরু করে।একপর্যায় মরিয়মের পরিবারকে বিষটি অবহিত করে আরিফের পরিবার।মরিয়ম এ ব্যাপারটি নিয়ে স্বামী আরিফের উপর খুব ক্ষিপ্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিবাহের দুই মাস পর মরিয়ম আত্মহত্যা করার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যর্থ হয়।পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে মরিয়মকে শুধরানোর জন্য আবারো পিত্রালয়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। মরিয়ম পিত্রালয়ে চলে গিয়ে কয়েকমাস পর আবার ফিরে এসে আগের চেয়ে আরো বেশ বেপরোয়া ভাবে চলতে থাকে এবং মাঝে মধ্যে আরিফের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপর চড়াও হতে শুরু করে। এভাবে বহুদিন কেটে গেলেও আরিফের পরিবার সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করে।একপর্যায়ে মরিয়মের অমানবিক আচরনে অতিষ্ট হয়ে আরিফ এবং মরিয়মের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে আবারও শালিস বৈঠক হয়। শালিসীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মরিয়মকে তাঁর পিত্রালয়ে এবং আরিফের বাড়িতে যাওয়া আসার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। পরে গত ২০/০১/২০২১ইং তারিখে মরিয়ম তাঁর পিত্রালয়ে গিয়ে ফিরে না এসে স্বামী আরিফকে ফোনে করে বলে- তুমি আমাকে তালাকনামা পাঠিয়ে দাও। আমি তোমার সংসার করতে রাজি নই।

এরই প্রেক্ষিতে আরিফ তারঁ স্ত্রীকে বার বার বাড়ি ফিরে আসার জন্য বলে ব্যর্থ হয়ে গত ১৮/০৫/২০২১ তারিখে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ক্রমিক নং ৫৩৮/৫৩৮ রসিদ নম্বরে তালাকনামার কপি মরিয়ম ও ফরিদগঞ্জের স্থানীয় ৩নং সুবিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করেন।

আরিফ হোসেনের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার তালাকনামা পাওয়ার ১২ দিন পর আরিফ সহ তাঁর ৪ বোন ও বাবাকে বিবাদী করে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে সি আর মামলা নং ২৪৪/তারিখ ৩০/৫/২০২১ দায়ের করে। এই মামলায় হাজিরা দিতে গেলে আরিফকে আটক করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

এদিকে এই ঘটনায় আরিফের পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানীর অভিযোগ করেন আরিফের বোন ঝর্ণা আক্তার। তিনি বলেন,প্রাইভেট মেডিক্যাল থেকে ভূয়া ডকুমেন্টস তৈরি করে আমার ভাই আরিফের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাঁর সাবেক স্ত্রী মরিয়ম। হাজীগঞ্জ উপজেলার হলিকেয়ার ডিজিটাল মেডিক্যাল সেন্টার এন্ড হাসপাতালের পেশেন্ট আইডি নং ১১৬৬,তারিখ ২০/১২/২০২০ ইং এর যে আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট দিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন তা সম্পূর্ণ ভূয়া ও ভিত্তিহীন বলে জানান হাসপাতাল কতৃপক্ষ।হাসপাতাল কতৃপক্ষ তাদের সফটওয়ার এর যাবতীয় তথ্য যাচাই বাছাই পূর্বক জানান এই আইডি এবং এই নামের কোনো রোগী হাসপাতালে আসেননি এবং এই নাম এবং নম্বরে কোনো রসিদ কাটা হয়নি। ২০/১২/২০২০ ইং তারিখে রোগীদের পরিক্ষা করার জন্য সফটওয়ার এর আইডি নং ০৪৩০১৮ থেকে ০৪৩০৫৩ পর্যন্ত রসিদ কাটা হয়। যাহার সত্যতা স্বীকার করে প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ।কতিপয় অসাধু আইনজীবীর অপকৌশলে ভুয়া ডকুমেন্ট এর মিথ্যা অভিযোগে আমার ভাই কারাগারে রয়েছে আর আমি সহ আমার পরিবারের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে এই মামলায়। আমরা এর সুষ্ট প্রতিকার চাই।

ঝর্না আক্তার আরো জানান,মরিয়মের গর্ভে কোনো সন্তান ছিলো না।গত ১৯/০১/২০২১ তারিখে মরিয়মকে আমরা যখন হাজীগঞ্জের সেন্টাল হাসপাতালে নিয়ে যাই তখন ডাঃ ফারহানা সুলতানা মরিয়মের পরিক্ষা নিরিক্ষা শেষে প্রতিবেদন দেখে বলেন মরিয়মের গর্ভে কোন সন্তান নেই। যার যাবতীয় ডকুমেন্ট আমরা সংগ্রহ করে রেখেছি।কতিপয় অসাধু আইনজীবীর প্ররোচনায় আমার ভাই আরিফের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে প্রতারনা করেছে মরিয়ম। আমরা এই মিথ্যা মামলা থেকে পরিত্রান চাই।

Comments are closed.

More News Of This Category