রবিবার, ৯ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুরে জাহাজে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন 

বিশেষ প্রতিবেদক,চাঁদপুর

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা মদীর মুখে নোঙর করে রাখা  সারবোঝাই এমভি আল বাখেরা জাহাজে ডাকাত দল/জলদস্যুর হামলায় নির্মম হত্যাকাণ্ড ও আহতের ঘটনায় শিল্প মন্ত্রণালয় গভীর শোক প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর শিল্প মন্ত্রণালয় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এবং সদস্যসচিব হিসেবে একজন যুগ্ম সচিব দায়িত্ব পালন করবেন। এই কমিটিকে ঘটনার কারণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ, দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের নৌ দুর্ঘটনা রোধে করণীয় বিষয়ে সুস্পষ্ট সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল জানায়, ১৯ ডিসেম্বর আল-বাখেরা নামের জাহাজটি ইউরিয়া সার পরিবহনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এটির ধারণক্ষমতা ৮০০ মেট্রিক টন। এর পণ্য পরিবহন ঠিকাদার মেসার্স হামিদিয়া এন্টারপ্রাইজ। বরাদ্দ পাওয়ার পর জাহাজটিতে ২১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর কাফকো জেটি থেকে ৭২০ টন ইউরিয়া সার বোঝাই করা হয়। রবিবার ভোরে সার নিয়ে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীর উদ্দেশে রওনা হয়। রাতে হাইমচর উপজেলার ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করার কথা ছিল। এই সার ছিল বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি)।
এমভি আল-বাখেরা জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাত জনের মধ্যে ছয় জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় একই কোম্পাানির অপর জাহাজের (মুগনি-৩) নাবিকরা এই ছয় জনের পরিচয় জানিয়েছেন। তবে নিহতদের পরিচয়ের বিষয়ে এখনও জেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশের পক্ষ থেকে কিছুই জানানো হয়নি।
সহকর্মীদের দেওয়া তথ্যমতে, নিহতরা হলেন জাহাজটির চালক (মাস্টার) কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি। আহত ব্যক্তির নাম জুয়েল। তাদের সবার বাড়ি নড়াইলে। জুয়েলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।



২৩ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ‘মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের’ মালিকানাধীন এমভি আল-বাখেরা নামের জাহাজটি থেকে পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এ সময় আরও তিন জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজনের মৃত্যু হয়। তবে কারা তাদের হত্যা করেছে, তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নৌ পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ধারণা জাহাজে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে নিহতের বিস্তারিত নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা করছি আমরা।’
হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লাশ ও আহত ব্যক্তিদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। কারও কারও ছিল গলাকাটা। পুলিশের ধারণা, রবিবার রাতে দুর্বৃত্তরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

Comments are closed.

More News Of This Category